[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

রংপুর নগরীতে আত্মহত্যা গাছ ঘিরে রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রংপুর নগরীতে আত্মহত্যা গাছ ঘিরে রহস্য

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুর নগরীর একটি গাছকে ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন এটি সুইসাইড ট্রি। এই গাছের কারণে মানুষ আত্মহত্যা করেন।
গাছটি নগরীর ব্যস্ততম সড়কের পাশে হলেও এখন পর্যন্ত ওই গাছের কারণে কেউ আত্মহত্যা করেছেন- এমনটি জানা যায়নি। নগরীর মডার্ন মোড় থেকে রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের পাশে এই গাছটির অবস্থান।
রংপুর বন বিভাগের এক কর্মকর্তার কাছে ওই গাছের ছবি পাঠালে তিনি বলেন, ওই গাছের বিষয়ে আমরা সার্চ করছি। কী প্রজাতির গাছ তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত ওই গাছটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
ওই গাছের পাশেই চা-দোকানি আবদুল হান্নান জানান, অনেকে এসে এই গাছটিকে সুইসাইড গাছ বলেন। তিনি এই গাছটি ছোট থেকেই দেখছেন। তিনি বলেন, রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক নির্মাণের সময় স্থানীয় কবির মিয়া নামে এক ব্যক্তি গাছটি লাগিয়েছেন বলে শুনেছি। গাছটির অবস্থান থেকে কিছুটা দূরে কবির মিয়ার বাড়ি। গাছটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সড়ক বিভাগের এক কর্মকর্তা আমাকে ওই গাছের চারা দিয়ে বলেছিলেন এটি বিদেশি গাছ। গাছটি তুমি রোপণ কর। ওই কর্মকর্তার কথায় গাছ লাগিয়েছি। ওই গাছের বয়স ৩৫/৪০ বছর হবে। তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ওই গাছে কোনো পাখি কিংবা কোনো প্রাণীকে বসতে দেখিনি। এমনটি পিঁপড়াকেও কখনো ওই গাছে দেখিনি। তিনি বলেন, অনলাইনে সার্চ দিয়ে জানতে পারি, এ ধরনের গাছকে নাকি সুইসাইড ট্রি বলা হয়। এটি সুইসাইড ট্রি হলে মানুষের ক্ষতি হতো। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই গাছের কারণে কারও ক্ষতি হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
এদিকে ফসল ও উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সুইসাইড ট্রি নামে গাছ আছে। তবে বিভিন্ন অঞ্চলে গাছটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। ভারতের কেরালায় এর নাম ওথালাঙ্গা মারাম, তামিলনাড়ুতে এর নাম কাট্টু আড়ালি। মাদাগাস্কারে ফামেন্তনা ট্য্যাংগেনা নামে পরিচিত। শ্রীলঙ্কায় একে ‘পং-পং’ ‘বিন্তোরো’ কিংবা ‘নয়ন’ নামে ডাকা হয়। সিংহলিজ ভাষায় এর নাম গন কাদরু। এই গাছটি প্রাকৃতিকভাবেই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে জন্মায়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কেরালার উপকূলীয় অঞ্চলেই এই গাছটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। গাছটিতে ‘কার্ডেনোলাইড’ এবং ‘কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড’ নামক বিষাক্ত টক্সিন রয়েছে, যা মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে হৃদপেশির কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। ফলে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন শুরু হয়। অনেক সময় গাছের সংস্পর্শে এসে অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য মানুষের আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা ওই গাছের পরিচয় নির্ধারণের জন্য কাজ করছি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই জাতীয় গাছ সুন্দরবনে রয়েছে। সুইসাইড ট্রি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এ ধরনের গাছের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে তিনি বলেন, খুব দ্রুতই ওই গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
লেখক ও সাহিত্যিক রানা মাসুদ বলেন, গাছটি আমি দেখেছি। সুইসাইড ট্রি বিশ্বের অন্যান্য দেশে রয়েছে। তবে এটি সুইসাইড ট্রি কি না বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *